স্বপ্নযাত্রা এখন সুমির স্বপ্নসিঁড়ি

বড় হয়ে শিক্ষক হবে, শিক্ষার আলো ছড়াবে সবার মাঝে এমনই স্বপ্ন সুমি আক্তারের। ভবিষ্যৎ স্বপ্নের কথা যখন বলছিল, তা ক’বছর আগের কথা। বাবার সংসারে অভাব-অনটনে একবার লেখাপড়া বন্ধ হয়ে গিয়েছিল সুমির। অতঃপর তার আগ্রহ আর পরিবারের ইচ্ছাশক্তির বলে আবার ফিরে আসে শিক্ষাজীবনে।

সুমি আক্তার মুন্সিগঞ্জের সদর উপজেলায় বহমান ধলেশ^রী শাখা নদীর পাড় ঘেঁষে জেগে ওঠা মোল্লারচর এলাকার বেদেপল্লির এক মেয়ে । বাবা সিরাজুল ইসলামের দ্বিতীয় কন্যা সুমি। বাবা নদী-খালে মাছ ধরে আর মা পাড়া-মহল্লায় ফেরি করে কাচের জিনিস বিক্রি করে। পরিবারে যা রোজগার হয় তা দিয়ে কোনভাবে সংসার চলে। সুমির ছোট আরেকটি ভাই আছে, সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। ভাইবোনের পড়ালেখার জন্য খাতা, কলম, গাইড বই, স্কুল ড্রেস, যাতায়াত খরচ, খাবার, বিভিন্ন ফি ও অন্যান্য শিক্ষা উপকরণের টাকা জোগাড় করা পরিবারের জন্যে ভীষণ কষ্টসাধ্য ব্যাপার। প্রতিনিয়তই সন্ধ্যার আলো নিভে মাঝরাতের কালো অন্ধকারের মতন পরিবারের আর্থিক পিছুটান বারবার তাড়া করে চলে সুমির আলোকিত শিক্ষাজীবনের অবসান ঘটাতে।

সুমির পরিবারের এই অক্ষমতার কথা শুনে ‘স্বপ্নযাত্রা’ ২০১৯ সালের মার্চ থেকে হাত বাড়িয়ে দেয়। দায়িত্ব নেয় সুমির শিক্ষাজীবনের ব্যয় বহনের।‘স্বপ্নযাত্রা’ চায় সুমির সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ আর আর্থিক বাধাহীন শিক্ষাজীবনের সফল পরিসমাপ্তি।

সুমি বর্তমানে মুন্সিগঞ্জের প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ড. ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল এন্ড কলেজের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী। মেধার বিবেচনায় ক্লাসের অন্যদের তুলনায় সে অনেক ভালো। পঁচাত্তর জন ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে সুমির অবস্থান ২৮তম। সুমি একদিকে যেমন মেধাবী অন্যদিকে বেদেপল্লির শান্ত মেয়ে, সবার মুখে মুখে তার অনেক প্রশংসা। অদম্য ইচ্ছা আর মেধাশক্তিতে বলিয়ান হয়ে সুমি স্বপ্নসিঁড়ি বেয়ে তার লক্ষ্যে পৌঁছাক, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

Related Posts

স্বপ্নযাত্রা – একটি স্বপ্নের শুরু

“স্বপ্নযাত্রা” – স্বপ্ন পূরণের গল্প

২০১৫ সাল। উন্নয়নকর্মী মহুয়া আপা একদিন ফোন করে বললেন, একটা ছেলে ঢাকা কলেজে ভর্তি হয়েছে;Read More

আইনজীবী হওয়াই ‘প্রণয়ের’ অভিপ্রায়

ক্লান্ত বিকেল, সময় ঠিক পাঁচটা। আমার অপেক্ষার প্রহর যেন শেষ হচ্ছে না। ভাবছেন কিসের অপেক্ষা?Read More

Comments are Closed