মেডিকেলে পড়ার স্বপ্ন পূরণ হল ঝিনাইদহের রাশেদুলের
অর্থের অভাবে এক দিনও প্রাইভেট পড়া হয়নি রাশেদুল ইসলামের। উল্টো নিজের পড়াশোনার খরচ জোগাতে তাকে প্রাইভেট পড়াতে হত। চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টায় মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সবাইকে অবাক করে দিয়ে মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পায় রাশেদুল।
কিন্তু সেই স্বপ্নপূরণে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায় অর্থ। ভর্তি থেকে শুরু করে পরবর্তী পড়ালেখার খরচ কিভাবে জোগাড় করবে সেই চিন্তা ভর করে গোটা পরিবারের। বাবা মজনু মড়া কলের লাঙ্গলের চালক, অন্যের গাড়িতে কাজ করেন। মা ফিরোজা বেগম ঘরে বসে গরু-ছাগল, হাস-মুরগি, কবুতার পালন করে পরিবারের আয়ে ও ছেলের পড়াশোনায় সহযোগিতা করেন। কিন্তু মেডিকেলে ভর্তি ও পড়াশোনার খরচ চালিয়ে যাওয়ার সামর্থ্য রাশেদুলের পরিবারের পক্ষে সম্ভব নয়।
রাশেদুলের ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন যখন ধীরে ধীরে শেষ হতে চলেছে, তখন প্রথম আলো পত্রিকার মাধ্যমে স্বপ্নযাত্রা রাশেদুলের খোঁজ পায়। জানতে পারে তার সংগ্রামী জীবনের কথা। রাশেদুলের বাড়ি ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার ফাযিল্পুর গ্রামে। ওরা দুই ভাইবোন, সামিয়া রহমান নামে তার ৭ বছরের একটি বোন আছে। রাশেদুল ২০১৮ সালে রামনগর কে বি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ২০১৮ সালে জিপিএ – ৫.০০ নিয়ে এসএসসি পাশ করে এবং ২০২০ সালে এ এন্ড জে কলেজে থেকে এইচএসসি পাস করেন।
সবকিছু জানতে পেরে স্বপ্নযাত্রা তার স্বপ্নপূরণের জন্য পাশে এসে দাঁড়ায়। রাশেদুল এ বছর শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজে মেধা তালিকায় ৮৯৩ তম স্থান অধিকার করে। স্বপ্নযাত্রা ইতিমধ্যে রাশেদুলের ভর্তির জন্য ২০০০০.০০ টাকা প্রদান করেছে। এর পাশাপাশি তার মেডিকেল পড়াশোনার যাবতীয় খরচ বহন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
স্বপ্নযাত্রার মাধ্যমে পূরণ হবে রাশেদুলের ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন। দূর হবে বাবা-মায়ের ছেলেকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করে মানুষের মত মানুষ বানানোর চিন্তা। আশা করছি, রাশেদুলও এখন ডাক্তার হয়ে তার গ্রামের মানুষদের সেবা করার স্বপ্ন দেখছেন।
Related Posts
স্বপ্ন পূরণের এক ধাপ পার করলো স্বপ্নযাত্রার স্বপ্নসঙ্গীরা
আজ আমাদের অনেক আনন্দের দিন। আমাদের স্বপ্নযাত্রার ৫ জন শিক্ষার্থী এবারের এস এস সি পরীক্ষায়Read More
স্বপ্নযাত্রার দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য ঈদ উপহার
এবারের ঈদটা অন্যান্যবারের ঈদের থেকে কিছুটা আলাদা। মহামারি করোনা ভাইরাস ও ঘূর্ণিঝড় আম্পান এর কারণেRead More
Comments are Closed